স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তীব্র গরমে আমাদের কি কি খাওয়া উচিত আর কি কি খাওয়া উচিত নয়


স্বাস্থ্য সুরক্ষা,গরমে আমাদের করনীয়,স্বাস্থ্য টিপস,খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত,ডায়েরিয়া হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত,ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত,গরমকালে কি কি খেতে হবে,ডায়রিয়া হলে কি করবেন,ডায়রিয়া হলে করণীয় কি,ডায়েরিয়া হলে কি খাবার খাব,তীব্র গরমে শরীরের তাপমাত্রা কমানোর প্রমাণিত উপায়



তীব্র গরমে আমাদের স্বাস্থ্য অনেক খারাপ হয়ে যেতে পারে যেকোনো সময়। তাই এই সময়ে আমাদের উচিত নিজেদের স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখা। কারন স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে গেলে আপনি কোন কাজই করতে পারবেন না। মূল কথা হলো তীব্র গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায় আর এর কারণ হলো খাবার এর প্রতি অসচেতনতা।

কি কি খাবেন : 

১. কম পরিমাণ মশলাযুক্ত খাবার: 
কারন এ সকল খাবার সহজে হজম করা যায়।

২. শসা:

এটিই হতে পারে এই গরমে আপনার প্রিয় খাবার। শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি যা আপনার শরীরের পানির চাহিদাকে পূরণ করতে সাহায্য করবে।

৩.নিরাপদ পানি :
তীব্র গরমে আপনাকে একটু বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ১০-১২ গ্লাস পানি পান করা উচিত । 

৪. পাতলা স্যুপ : 
গরমে আপনি পাতলা করে সবজি স্যুপ খেতে পারেন যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

৫.ডাবের পানি : 
শরীরে ইলেকট্রলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে ডাবের ভূমিকা অপরিসীম।

৬. লেবু পানি : 
এই গরমে আপনি লেবু পানি পান করতে পারেন। এতে আপনার শরীরের ক্লান্তি দূর হবে। তবে আপনি এতে স্বাদ মতো অল্প পরিমাণে লবন ব্যবহার করতে পারেন। তবে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা এটা এড়িয়ে যেতে পারেন।

৭.ফলমূল : 
শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করতে বেশি বেশি ফলমূল খাওয়া উচিত। 

৮. কাঁচা আমের শরবত :
এটি খেলে আপনার শরীরে গরম অনুভব কম হবে। এছাড়া এটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি । 

৯. টক দই : 
টক দই আপনার পাকস্থলীকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ।

কি কি খাবেন না : 


১. বেশি মশলাযুক্ত খাবার :
কারন বেশি মশলাযুক্ত খাবার হজম হতে বেশি সময় নেয় এতে শরীরে গরম লাগতে শুরু করে।

২.ডিম :
যদিও ডিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ খাবার আমাদের শরীরের জন্য । কারন এটা আমাদের শরীরের প্রোটিনের চাহিদা মেটায় । তবে এই গরমে ডিম খেলে অনেকের সমস্যা হতে পারে। তাই ডিমের  পরিবর্তে মাছ কিংবা মুরগির গোশত খেতে পারেন।

৩. আইসক্রিম ও কোমল পানীয় 

৪.ফাস্টফুড : 
এগুলো শুধু গরমে নয় সব সময়ই এড়িয়ে চলা উচিত। 

৫. ডুবো তেলে ভাজা খাবার : 
এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলো পানির ঘাটতি তৈরি করে।

৬.চা- কফি : 
যেহেতু শীতকালে আমরা চা-কফি পান করি আমাদের শরীর গরম রাখার জন্য সেহেতু বোঝায় যাচ্ছে গরম কালেও এটি একই ভূমিকা পালন করবে।

৭. অতিরিক্ত চিনি ও লবণ :
এই দুটোই আমাদের শরীর এর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আর গরমে এর মাত্রা তো আরো বেড়ে যায় । এটি শরীর এর জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে।

৮. চর্বি জাতীয় খাবার : 
আমরা অবশ্যই জানি গরুর গোশত, খাসির গোশত তে প্রচুর পরিমাণে চর্বির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এগুলো যতটা সম্ভব পরিহার করা উচিত।

৯. স্টেক : 
এটি খেতে অনেকেই পছন্দ করে তবে এটি যদি সম্পূর্ণরূপে ভালো করে রান্না করা না হয় তাহলে এর মাঝে ব্যাকটেরিয়া থেকে যেতে পারে। তাই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।


কিভাবে খাবার সংরক্ষণ করবেন: 

এই গরমে আমাদের খাবার সংরক্ষণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। কারন চারপাশে এতো বেশি পরিমাণ তাপ থাকে যার কারণে সহজেই ব্যাকটেরিয়া হতে পারে। তাই আমাদের উচিত খাবার গুলোকে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার মাঝে রাখতে। এতে করে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে না। গরমে খাবার সঠিক ভাবে ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে। আর বাসি খাবার তো একদমই খাওয়া উচিত নয়। তবে ফ্রিজে খাবার রাখলেও অনেক সময় এটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, তবে খালি চোখে আমরা নাও বুঝতে পারি । তাই ২-৩ দিনের বেশি সংরক্ষণ করা উচিত নয়।


ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে যা যা করবেন: 

যেহেতু গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি বেড়ে যায় তাই আমাদের উচিত উপরের দেখানো কি কি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া উচিত এবং উচিত নয় এটা সঠিক ভাবে মানা । এছাড়াও আমাদের উচিত ভরপেট না খেয়ে কিছুটা বিরতি দিয়ে খাবার খাওয়া । এছাড়া দুধ এবং ভাতে যে ব্যাকটেরিয়া হয় তা আমাদের ভয়ঙ্কর ডায়রিয়া তৈরি করতে পারে। তাই আমাদের উচিত এগুলো যখন ফ্রিজ থেকে বের করবো তারপর এটিকে গরম করবো এবং এটিকে আবার স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এনে খেতে হবে । এছাড়া যেকোনো খাবারই সবসময় আমাদের ঢেকে রাখা উচিত। কারন এসব খাবার এর উপরে মাছি বসতে পারে । আর আমরা জানি মাছি ডায়রিয়ার সংক্রমন ছড়ায়। এছাড়া বাইরে থেকে লেবুর শরবত, ফুচকা, চটপটি এগুলো পরিহার করতে হবে। এছাড়া আমাদের উচিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা। এর কোন বিকল্প নেই। এছাড়া ডায়রিয়ার জীবাণু সবচেয়ে বেশি ছড়ায় পানির মাধ্যমে। তাই আমাদের উচিত সবসময় বিশুদ্ধ পানি পান করা । তবে নিজে সচেতন না হলে কোন কিছুতেই কাজ হবে না । তাই সব সময় উচিত নিজে সচেতন হওয়া এবং অপরকে সচেতন করে তোলা । এর ফলে নিজেও সুরক্ষিত থাকতে পারবেন এবং অপরকেউ সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারলেন । সুতরাং আপনার উচিত ওপরের সকল দিকনির্দেশনা মেনে চলা এবং প্রয়োজনে ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা এবং সকল দিকনির্দেশনা মেনে চলা । অতএব আপনি আপনার স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখুন । আপনার সুস্থতা কামনা করছি ।













 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন